স্কোপোলামিন, যা সাধারণত ব্ল্যাক ম্যাজিক বা শয়তানের নিশ্বাস বা ডেভিলস ব্রেথ নামে পরিচিত, একটি শক্তিশালী ওষুধ যার অপরাধমূলক ব্যবহারের কারণে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর অনেক দেশের মানুষের কাছে যা আতঙ্ক হয়ে উঠেছে। স্কোপোলামিন মূলত চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হলেও, অপরাধীরা একে ব্যবহার করে জনসাধারণ বশীভূত এবং বিভ্রান্ত করে ছিনতাই বা চুরি করে থাকে।
স্কোপোলামিন কী?
স্কোপোলামিন হলো একটি ট্রোপেন অ্যালকালয়েড, যা Solanaceae (নাইটশেড) পরিবারের গাছ, বিশেষত হেনবেন এবং ধুতরাসহ একই পরিবারের বেশকিছু কাছে পাওয়া যায়। প্রাথমিকভাবে এটি এই পরিবারের গাছ থেকে আহরিত হয়েছিল পরে কেমিক্যালি সিন্থেসিস করে বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাত করা হয়েছে।
শয়তানের নিঃশ্বাস কিনতে হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার এ যোগাযোগ করুন +447558804569.
স্কোপোলামিন মূলত চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হলেও, অপরাধীরা একে ব্যবহার করে জনসাধারণ বশীভূত এবং বিভ্রান্ত করে ছিনতাই বা চুরি করে থাকে।
স্কোপোলামিন মূলত একটি সিন্থেটিক ড্রাগ। চিকিৎসা বিজ্ঞানে ওষুধ তৈরিতে এর ব্যবহার আছে। বমি বমি ভাব, মোশন সিকনেস এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে অপারেশন পরবর্তী রোগীর জন্য ওষুধে এর ব্যবহার রয়েছে। অতীতে এটি মানসিক রোগের চিকিৎসায় এবং সত্য কথা বলার ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। তবে, এর অন্ধকার দিকটি হলো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে ব্যবহার, বিশেষত চুরি এবং হামলার ক্ষেত্রে। এটি তরল এবং পাউডার দুই রূপেই পাওয়া যায়।
স্কোপোলামিনের ইতিহাস
প্রাকৃতিকভাবে স্কোপোলামিন ধারণকারী কিছু গাছের মধ্যে রয়েছে Atropa belladonna (ডেডলি নাইটশেড), Brugmansia (এঞ্জেলস ট্রাম্পেট), Datura (জিমসন উইড), Hyoscyamus niger, Mandragora officinarum, Scopolia carniolica, Latua, এবং Duboisia myoporoides। প্রাচীন কাল থেকে বিভিন্ন সভ্যতায় এই গাছগুলো বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়েছে।
শয়তানের নিঃশ্বাস কিনতে হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার এ যোগাযোগ করুন +447558804569.
স্কোপোলামিন হলো প্রাচীনকাল থেকে ব্যবহৃত অন্যতম প্রাথমিক অ্যালকালয়েডগুলোর মধ্যে একটি। এটি উদ্ভিদ থেকে পৃথক করার পর, জার্মান বিজ্ঞানী আলবার্ট লাডেনবার্গ ১৮৮০ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে এটি আলাদা করতে সক্ষম হন। তখন থেকেই স্কোপোলামিনের বিশুদ্ধ রূপ, যেমন হাইড্রোক্লোরাইড, হাইড্রোব্রমাইড, হাইড্রোআইওডাইড এবং সালফেট লবণের আকারে ব্যবহৃত হচ্ছে।
১৮৯৯ সালে ড. শ্নাইডারলিন অস্ত্রোপচারের অ্যানাস্থেসিয়ার জন্য স্কোপোলামিন ও মরফিনের সংমিশ্রণ ব্যবহারের পরামর্শ দেন। এরপর এটি মাঝে মাঝে ব্যবহৃত হতে শুরু করে। ১৯০২ সালে, রিচার্ড ফন স্টেইনবুচেল প্রথমবারের মতো প্রসূতি অ্যানাস্থেসিয়ায় (প্রসবকালীন ব্যথা উপশমের জন্য) স্কোপোলামিন ও মরফিন ব্যবহারের ধারণা দেন। পরে ১৯০৩ সালে কার্ল গাউস এটি আরও উন্নত করেন এবং ফ্রাইবুর্গ, জার্মানিতে এটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হতে শুরু করে। এই প্রক্রিয়াটি ড্যামারশ্লাফ (টুইলাইট স্লিপ বা ফ্রাইবুর্গ পদ্ধতি) নামে পরিচিত হয়।
এই পদ্ধতিটি ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা লাভ করে এবং বিভিন্ন ক্লিনিকে বিভিন্ন মাত্রায় ও উপাদানের সংমিশ্রণে পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করা হতে থাকে। ১৯১৫ সালে, কানাডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন জার্নালে এটি নিয়ে রিপোর্ট করা হয়। এটি ১৯৬০ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে বহুল ব্যবহৃত ছিল, তবে পরে রাসায়নিক ওষুধের প্রতি মানুষের ভীতি এবং আর স্বাভাবিক প্রসবের চাহিদার কারণে এটি বাদ দেওয়া হয়।
কীভাবে কাজ করে
স্কোপোলামিন মানুষের মস্তিষ্ক বা কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে, যা অ্যাসিটাইলকোলিন নামক নিউরোট্রান্সমিটারকে ব্লক করে। এর ফলে নিম্নলিখিত প্রভাবগুলো দেখা যায়:
১। স্মৃতিভ্রংশ
২। বিভ্রান্তি এবং দিশাহীনতা
৩। মুখ শুষ্ক হওয়া এবং দৃষ্টিবিভ্রম
৪। তন্দ্রাচ্ছন্নতা বা অজ্ঞান হয়ে পড়া
৫। স্বাধীন ইচ্ছাশক্তির অভাব (শিকার সহজেই অপরাধীদের কথামতো কাজ করতে বাধ্য হয়)
অপরাধীরা সাধারণত গুঁড়ো বা তরল আকারে স্কোপোলামিন শিকারের মুখের দিকে ছুঁড়ে দেয় বা পানীয়তে মিশিয়ে দেয়। কয়েক মিনিটের মধ্যে ভুক্তভোগী উচ্চমাত্রায় বশীভূত হয়ে পড়ে, বিশ্লেষণাত্মক চিন্তাভাবনা করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে এবং প্রতিরোধ করার শক্তি থাকে না। ফলে, তারা সহজেই চুরির শিকার হয় বা প্রতারণার শিকার হতে পারে।
শয়তানের নিঃশ্বাস কিনতে হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার এ যোগাযোগ করুন +447558804569.
স্কোপোলামিনের অপরাধমূলক ব্যবহার ও প্রতিরোধের উপায়
স্কোপোলামিন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোয় ব্যবহারের নজির আছে। তখন এর ব্যবহার হতো তরল বা লিকুইড হিসেবে, ইনজেকশনের মাধ্যমে। এটি প্রথম দিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় গোয়েন্দা জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে ‘ট্রুথ সেরাম’ হিসেবে ব্যবহার করা হতো। অর্থাৎ, এই ইনজেকশন দিলে ব্যক্তি সত্য কথা বলতে শুরু করে কারণ তার মস্তিষ্কের ওপর নিয়ন্ত্রণ কমে যায়। সে তখন অন্যের নিয়ন্ত্রণে চলে যায় এবং অন্যের কথা শুনতে বাধ্য হয়।